পুরস্কার পাওয়ার জন্য ভাগ্য লাগে’

জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে একটি ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে পার্শ্ব চরিত্রের জন্য এ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মেহের আফরোজ শাওন। এই নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত তানিয়া আহমেদ। তার ভাষ্য, যে কোনো প্রাপ্তি অবশ্যই অনেক আনন্দের। আর সেটি যদি হয় রাষ্ট্রিয় পুরস্কার তাহলে তো আনন্দটাও অনেক বেশি।
পুরস্কার সব কাজের জন্য পাওয়া যায় না। কিছু কিছু সময় অনেক ভালো কাজও আড়াল হয়ে যায়। সত্যি বলতে, পুরস্কার পাওয়ার জন্য ভাগ্য লাগে। আমি নিজেকে ভাগ্যবতি বলে মনে করি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে এই পুরস্কার নিতে পেরেছি। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ হুমায়ূন আহমেদের গল্প। এদিকে হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরেই এই অভিনেত্রীর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন তিনি? এই প্রশ্নের উত্তরে তানিয়া বলেন, ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই আমি বানিজ্যিক চলচ্চিত্রের জন্য প্রস্তাব পেয়ে আসছি। কিন্তু সেই ধরনের চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে কখনোই আমি আগ্রহী ছিলাম না। আমাদের দেশে বানিজ্যিক ছবি কিংবা আর্ট ফিল্মের মতো হুমায়ূন আহমেদের ছবিও একটি ধারা তৈরি করেছে। সেই কারণে স্যারের ছবির প্রস্তাব পেয়ে এক কথায় রাজি হয়ে যাই। আমার সৌভাগ্য স্যারের ছবিতেই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে। আবার স্যারের গল্পের ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। এজন্য শাওনের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে তার শুরুটা কিভাবে হয় সে সম্পর্কেও জানালেন তানিয়া। তিনি বলেন, ২০০০ সালের দিকে স্যার একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক নাটক নির্মাণ করেছিলেন। সেটিতে ডাক্তারের একটি চরিত্র ছিল। এতে প্রথম অনেকে অভিনয় করেন। কিন্তু কেউ স্যারের মনের মতো কাজ করতে পারেননি। এটি ছিল এশিয়াটিকের নূর ভাইয়ের কাজ। পরে নূর ভাই আমাকে ডাক্তার চরিত্রটি করার জন্য প্রস্তাব দেন। তখন আমার বেবি ছোট ছিল। স্যার তখনো আমাকে চিনতেন না। আমার প্রথম কাজ দেখেই স্যার তখন আমাকে তার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। তারপর থেকে স্যারের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। স্যারকে আমি সব সময় আমার পিতার মতোই দেখতাম। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি ‘ভালোবাসা এমনই হয়’ নামের একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন এই অভিনেত্রী। নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে তার পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে বলেন, আমার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য সবার কাছ থেকে বেশ প্রশংসা পেয়েছি। পরবর্তি ছবিটির জন্যও তেমন একটি গল্প চাই। যেটি সবার মনে দাগ কাটবে। আমি এখন গল্প নিয়ে ভাবছি। কয়েকটি গল্প হাতে আছে। এগুলো থেকে হয়তো নতুন ছবির কাজ শুরু করতে পারি। আলাপনে তানিয়া এই সময়ের চলচ্চিত্র নিয়েও কথা বলেন। বর্তমানে আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের বাজার বড় হচ্ছে বলেই তিনি মনে করেন। তার মতে, দেশের বাইরেও অনেক ছবি পুরস্কৃত হচ্ছে। এছাড়া এখন আমাদের চলচ্চিত্রের প্রতি শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা আগ্রহী। আগামীতে আমাদের চলচ্চিত্র আরো এগিয়ে যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এদিকে সম্প্রতি এই অভিনেত্রীর ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়। এরইমধ্যে তিনি থানায় জিডিও করেছেন। তানিয়া বলেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে আমি নিয়মিত। কিন্তু হঠাৎ করেই একটি ছেলে আমার আইডি হ্যাক করে। কে করেছে সেটিও আমি জানি। আমি থানায় জিডি করেছি। এটি প্রমানিত হলে ছেলেটির সাজাও হবে। কিন্তু আমি সেটি চাইনা। আমি অন্য একটি আইডি দিয়ে ছেলেটির সঙ্গে কথা বলেছি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ছেলেটিকে একদিন ডেকে এমন কাজ আর না করার জন্য বলে দিবো।